সমস্ত প্রসংশা মহান আল্লাহ তাআলার জন্য যিনি এক স্থানকে অন্য স্থানের উপর, এক সময়কে অন্য সময়ের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। যিনি মানব জাতিকে জ্ঞান গড়িমা বুদ্ধি দিয়ে সকল সৃষ্টি কুলের উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন। অসংখ্য দরূদ ও সালাম হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি যিনি দুনিয়াতে মুয়াল্লিম ও রহমত হিসাবে প্রেরিত হয়েছেন। আল্লাহ তাআলা কুরআন পাকের মধ্যে ইরশাদ করেছেন, আমি সৃষ্টিকুলকে মানব জাতির উপকারার্থে সৃজন করেছি এবং মানব জাতিকে একমাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃজন করেছি। সুতরাং উল্লেখিত বর্ণনার দ্বারা সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার বুকে মানব জাতিকে সৃষ্টি করার পেছনে একটি উদ্দেশ্য রয়েছে। আর সেই উদ্দেশ্য হলো মানব জাতি যেন ধ্বংসশীল এই দুনিয়ার বুকে তার জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্ তাআলার ইবাদাত করে তাঁর আদেশ নিষেধ পালন করে তার নৈকট্য অর্জন করতে পারে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানব জাতিকে যেই উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন তা তারা একটি গুণের মাধ্যমে অতি সহজে অর্জন করতে সক্ষম হবে। আর সেই গুণটি হলো তাকওয়া। কারণ আল্লাহ তাআলার নৈকট্য এবং দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতা অর্জন করার জন্য তাকওয়া একমাত্র চাবিকাঠি। তাকওয়া শব্দের আসল অর্থ হলো আত্মরক্ষা করা। শরীয়তের পরিভাষায় গুনাহ থেকে আত্মরক্ষা করার অর্থে শব্দটি ব্যবহৃত হয়। আল্লাহর সাথে সম্বন্ধযুক্ত হলে এর অনুবাদ করা হয় আল্লাহকে ভয় করা। উদ্দেশ্য আল্লাহর অবাধ্যতা ও গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা ও ভয় করা। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআন পাকের মধ্যে ইরশাদ করেন
ومن يّتّق الله يجعلّه مخرجا و يرزقه من حيث لا يحتسب
অর্থাৎ ঃ যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য প্রত্যেক সংকট ও বিপদ থেকে মুক্তির পথ করে দেন এবং ধারণাতীত রিযিক দান করেন।
আলোচ্য আয়াতে তাকওয়া তথা খোদাভীতির দু’টি কল্যাণ বর্ণিত হয়েছে।
১. তাকওয়া অবলম্বনকারীর জন্য আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার যাবতীয় সংকট ও বিপদ থেকে এবং পরকালের সব বিপদাপদ থেকে মুক্তির পথ করে দেন।
২. তাকে এমন জায়গায় থেকে রিযিক দান করেন যা কল্পনাও থাকে না। এখানে রিযিক এর অর্থ- ইহকাল এবং পরকালের যাবতীয় প্রয়োজনীয় বস্তু। এই আয়াতে মুমিন-মুত্তাকীর জন্য আল্লাহ তাআলা এই ওয়াদা ব্যক্ত করেছেন যে, তিনি তার প্রত্যেক সমস্যা সহজসাধ্য করেন এবং তার অভাব অনটন পূরণের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এমন পথে তার প্রয়োজনাদি সরবরাহ করেন যা সে ধারণাও করতে পারে না।
অন্যত্র কুরআন পাকের মধ্যে ইরশাদ হয়েছে,
انّ للمتّقين مفازا অর্থ্যাৎ- মুত্তাকীদের জন্য রয়েছে সাফল্য। সুতরাং কুরআন পাকের উল্লেখিত আয়াতদ্বয় দ্বারা এ কথাই প্রতীয়মান হয় যে, মাছের জীবন রক্ষা করার জন্য যেমন পানির প্রয়োজন তেমনি ভাবে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য এবং ইহকাল ও পরকালে সাফল্য অর্জন করার জন্য তাকওয়ার প্রয়োজন। তাই আসুন আমরা সকলেই তাকওয়া অর্জন করে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য এবং দুনিয়া ও আখেরাতের সাফল্য অর্জন করি। এর জন্য আল্লাহ ওয়ালার কাছে নিজেকে সোপর্দ করে দেই।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে তাওফীক দান করুন। আমিন।
No comments:
Post a Comment