Pages

কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব ও মুজিযা

Saturday, August 23, 2014



      সকল প্রসংশা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য, যিনি হাজারো নিয়ামতের মধ্যে আমাদেরকে ডুবিয়ে রেখেছেন। অসংখ্য দরূদ ও সালাম বিশ্ব নবী রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম এর উপর, যার কারণে আমরা পবিত্র কুরআন ও শরীয়ত পেয়েছি এবং প্রকৃত মাহবুবের পরিচয় লাভ করেছি। ইসলামী মূলনীতির প্রথম ও প্রধান উৎস এবং বিশ্ব মানবতার মুক্তির একমাত্র সনদ হচ্ছে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন। যাতে রয়েছে শরীয়তের যাবতীয় বিধি-বিধান মূলসূত্র। আধ্যাত্মিক ও বাস্তব জীবনের মূল কথা অতি হৃদয়গ্রাহী ভাষায় রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম এর মাধ্যমে যার প্রতিফলন ঘটেছে। মানুষের আধ্যাত্মিক, জাগতিক সকল বিভাগের পর্যাপ্ত ও পরিপূর্ণ আলোচনার এক মাত্র অধ্যায় হচ্ছে আল-কুরআন। কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তা’য়ালা পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ করেন-
 ولقد جئنهم بكتاب فصلناه علي علم هدي ورحمة لقوم يؤمنون-          অর্থাৎ- আমি তাদের কাছে এমন একটি কিতাব পৌঁছিয়েছি যা আমি স্বীয়  জ্ঞানে বিস্তারিত বর্ণনা করেছি, যা পথপ্রদর্শক এবং মুমিনদের জন্যে রহমত। (সূরা আ’রাফ-৫২)

কুরআন শরীফের শ্রেষ্ঠত্ব

      পবিত্র আল-কুরআন এমন একটি গ্রন্থ যার সাথে বিশ্বের কোন গ্রন্থের প্রতিদ্বন্দ্বিতা সম্ভব নয়। বিশ্বে কোন গ্রন্থের সাবলিলতা, সাহিত্যকতা, মাধুর্যতা ও রচনা বিন্যাস কুরআনের সমকক্ষ হতে পারে না। যার চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করে বলেছেন, হে নবী! বলুন, যদি সমগ্র মানব ও জ্বিন জাতি একত্রিত হয়ে এই কুরআনের মত কোন গ্রন্থ আনতে চায় তাহলে আদৌও তা পারবে না। যদি তারা একে অপরে সাহায্য গ্রহণ করে তবুও পারবে না। (বনী ইসরাঈল- ৮৮)
      
আরবরা ছিল সাহিত্যমোদী। যখন কুরআন অবতীর্ণ হল তখন তার সাহিত্য রস প্লাবিত করল সাহিত্য সাগর। পরাজিত করল সাহিত্য কলার সকল কবি যাদুকরদেরকে। তখন আর তাদের বিষ্ময়ের সীমা রইল না। বিষ্ময়কর মধুময় ইলাহী কথা মালার বাক্যগুলোর আবৃতি হয়ে উঠল সাহিত্য মনের সর্বোচ্চ খোরাক। তারা মুগ্ধ হয়ে গেল এই কিতাবের তেলাওয়াতে। নিঃসন্দেহে ভাষা শৈলীর সাবলিলতা ও চমৎকারিত্বে আজও এর তুলনা নেই। তাই এ কথা চিরন্তন সত্য যে, এ কুরআন সর্বজনীন জীবন ব্যাবস্থা। তাই মহান আল্লাহর ঘোষণা হচ্ছে ‘আপনার উপর কুরআন নাযিল করেছি। তাতে প্রত্যেক বস্তুর সুস্পষ্ট বর্ণনা বিদ্যমান রয়েছে।’ রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরআনের আলোকে হাদীস বর্ণনা করেন। কিছু কিছু মাসআলা ইজমা ও কিয়াসের আওতায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এতে বুঝা যায় যে হাদীস, ইজমা ও কিয়াস থেকে সব মাসআলা নির্গত হয়েছে। সেগুলোও পরোক্ষভাবে কুরআনের বর্ণিত মাসআলা। (তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন)
 
      কুরআনের আয়াতগুলো এক দৃষ্টিতে গদ্যের আবার অন্য দৃষ্টিতে পদ্যের ন্যায়। বিশ্বের কোন সাহিত্য এ ধরণের সংমিশ্্রন দেখা যায় না। আল-কুরআন এর শ্রেষ্ঠত্বের প্রধান প্রমাণ হচ্ছে রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগ থেকে অদ্যাবদি এ গ্রন্থ আবিকৃত অবস্থায় স্বকীয়তার উপর বিদ্যমান রয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্তও এতে কোন পরিবর্ত হবে না।
 
     মূলত কথা হলো যে, এক বুজুর্গ বলেন যে, মাথা যখন শয়তানের দখলে চলে যায় তখন অযৌক্তিক সব কথা যুক্তির মাপকাঠি বলে মনে হয়। আর ভাল জিনিস মেনে নিতে পারে না। স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআনের জিম্মাদার। যুগে যুগে বিজ্ঞানীদের প্রেরণার উৎস হিসাবে কুরআন অভূতপুর্ব ভূমিকা পালন করে আসছে। এ মহাগ্রন্থে স্থান পেয়েছে এমন সব বিষ্ময়কর তথ্য, যার প্রতিটির কনিকাই সুস্পষ্ট ভাবে নির্দেশ করে যে, এটা কোন মানুষের রচনা নয়। কোন মানুষের দ্বারা অদৃশ্য জগতের এই সব তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। সকল বিজ্ঞানী মিলেও এখন পর্যন্ত আকাশের অস্তিত্বকেই স্পষ্ট করতে পারে নি। অথচ কুরআন শুনিয়েছে সপ্ত আকাশে রহস্য কথা। আকাশ ম-লীর বহু উর্ধ্বে অবস্থিত আল্লাহর আরশ কুরসির কথা। তাদের শক্তি হল মেশিনের দ্বারা পরিচালিত। অর্থাৎ- মেশিনের উপর নির্ভর, কিন্ত তাদের সে মেশিনের শক্তি হল চোখের নজর পর্যন্ত। হাওয়ার উপর থেকে আরশের উপরে কিছুই আজ পর্যন্ত তথ্য দিতে পারেনি। তাই কুরআনই হল মানুষের সব কিছুর সমস্যার সমাধান।
 
পৃথিবীর যে কোন গ্রন্থ একাধিকবার পাঠ করলে মনে বিরক্তির ভাব জন্মায় উহা নিজের কাছে পুরাতন মনে হয়। কিন্তু মহান আল্লাহ পাকের কালামে পাকের এমন শান যে, ইহা শতবার পাঠ করলেও মনের তৃষ্ণা মিটেনা। এমনকি হাজার বার তেলাওয়াত করলেও ইহা কখনো পুরাতন হয় না। বরং যত বার পাঠ করা হয় ততই যেন উহার আকর্ষণ এবং মধুরতা বৃদ্ধি পেতে থাকে।

পবিত্র কুরআন মাজীদের কিছু অলৌকিক ঘটনা

 
  •  রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লা যখন কুরআন তেলাওয়াত করতেন, তখন কাফেররা আকর্ষণে বিমুগ্ধ হয়ে যেত। কিন্তু কেউ কিছু বলত না। একদা রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম মসজিদে কুরআন তেলাওয়াত করেন, তখন পাশে দাড়িয়ে আবু জাহল শুনে মুগ্ধ হয়। এরপর অন্যান্য কাফেররা শুনে ইসলাম গ্রহণ করে।
  •  হযরত ইসমাঈল শহীদ রহ. যখন এক পতিতালয় এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন  তার দারোয়ানকে বলেন যে, ভিতরে গিয়ে মেয়েদেরকে বল যে, একজন লোক তোমাদেরকে গজল শোনাবে। অতঃপর ইসমাঈল শহীদ রহ. তাদেরকে কুরআন তেলাওয়াত করে শোনান। মেয়েরা শুনে সবাই মুগ্ধ হয়ে পড়ে। অতঃপর সবাই মুসলমান হয়ে যায়।
 কুরআনের মাধ্যমে আল্লাহ পাক আমাদের জীবন যাপন করার তাওফীক দান করুণ এবং রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসীলায় আমাদের কল্যাণ দান করেন। আমীন।

No comments:

Post a Comment

 

NameSilo Coupon Code "discount1$foryou"

like

like
like