Pages

সন্ত্রাসীদের ঘৃণ্য চক্রান্তের মুখোশ উন্মোচন

Saturday, August 23, 2014


     ইসলাম ধর্মকে চিরতরে মুছে ফেলার জন্য ইহুদী ও খ্রিষ্টানরা মুসলমানদের উপর বিভিন্নভাবে অস্ত্র সন্ত্রাসের পাশা-পাশি তথ্য সন্ত্রাসও চালিয়ে যাচ্ছে।

   ১. অস্ত্র সন্ত্রাসঃ আপনাদের জানা মতে তৎকালীন আমেরিকার জজ ডব্লিউ বুশ গণবিধ্বংসী অস্ত্র তৈরী করার অভিযোগে তার সৈন্যবাহিনী পাঠিয়ে ইরাকের উপর হামলা চালায়। ইরাক দখলের পর গদিতে বুশের পুতুল সরকার বসায়। ইরাকের প্রেসিডেণ্ট সাদ্দামকে হোসেনকে ঈদের দিন সকালে ফাঁসি দেয়। এরপর যখন বুশ গণবিধ্বংসী অস্ত্র প্রমাণ করতে পারল না তখন বিশ্বের বিবেকবানদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ আসতে লাগল যে, কোন অপরাধে ইরাকের উপর হামলা হয়েছে তা জানাতে হবে। 

      যখন কোন নিষিদ্ধ অস্ত্রের প্রমাণ দেখাতে পারল না তখন তাদের একথার জওয়াব দিতে না পেড়ে ইরাকের হামলাটাকে বৈধ করার জন্য একটি ষড়যন্ত্র করল। তাহল ২০০৪ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের একটি সমিতি, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস শিরোনামে ঢাকায় একটি সেমিনার করে। সেখানে প্রধান বক্তা হিসাবে প্রফেসর হেন্সকে আমন্ত্রণ করে আনা হয়। বাংলাদেশের প্রায় চৌদ্দ কোটি মুসলমানের রাজধানী ঢাকার বুকে দাঁড়িয়ে সে বক্তৃতা দেয় যে, ইসলাম সূচনা কাল থেকেই সন্ত্রাস লালন করে আসছে। ইসলামের নবী নিজেই জঙ্গী (নাউজু বিল্লাহ)। হেন্সের বক্তৃতায় যারাই ইসলাম ধর্ম পালন করে এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যারাই রাসূল হিসাবে বিশ্বাস করে চাই তাদের দাড়ি টুপি থাক বা না থাক তারা সবাই সন্ত্রাসী। এর প্রমাণ স্বরূপ হেনস বলে যে , ইসলামের সর্বশেষ নবী যদি জঙ্গীই না হতেন তাহলে ৬৬টি যুদ্ধ কেন পরিচালনা করেছিলেন? অথচ ইতিহাস খুললে অতি স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনে কখনো সন্ত্রাস করেন নি। বরং সন্ত্রাস দমন করেছেন। আর ৬৬টি যুদ্ধ ছিল সন্ত্রাস দমন করার জন্য। এ ব্যপারে আলোচনা করলে তা একটি বিশাল পুস্তিকার রূপ ধারণ করবে। তাই ৬৬টি যুদ্ধের সর্ব প্রথমটির ব্যপারে সামান্য কিছু আলোচনা করছি। রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৪০বছর বয়সের পর যখন বলতে লাগলেন
يا ايها الناس قولوا لا اله الا الله تفلحون-
হে লোক সকল! لا اله الا الله স্বীকার কর। তোমরা সফলকাম হয়ে যাবে।
     
       তখন থেকেই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধে আরম্ভ হল সন্ত্রাসী হামলা আর নির্যাতন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইসলামের দাওয়াত দেয়ার জন্য বাজারে যেতেন তখন মক্কার শীর্ষ সন্ত্রাসী আবু জেহেল নিজ চেলা-চামু-াদেরকে নিয়ে বাজারের মানুষদেরকে বলত, শোন মুহাম্মদ পাগল (নাউজুবিল্লাহ)। তার কথা তোমরা শুনবেনা। কিন্তু যখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাওয়াত দিতেই থাকেন তখন আবু জেহেল নিজের দলবল নিয়ে নবীজীর শরীর মোবারকে থুথু নিক্ষেপ করে শরীর ভিজিয়ে ফেলত। তার পর সেই ভিজা শরীরে রাস্তার বালু নিক্ষেপ করত। এরপরও যখন নবীজীকে ইসলামের দাওয়াত থেকে ফিরাতে পারত না তখন রাস্তার ধারালো পাথর নবীজীর গায়ে নিক্ষেপ করে সারা শরীরকে রক্তে রঞ্জিত করে ফেলত (নাঊজুবিল্লাহ)। এর পরেও যখন কাজ হল না তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গলায় গামছা বেঁধে রাস্তার অলি-গলিতে নবীজীকে টানা হেছড়া করত। এই হল ইসলামের সূচনাকালের মর্মান্তিক ইতিহাস।
                                                                                                                                                                        এ রকমের অমানুষিক সন্ত্রাসী হামলা সহ্য করে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দীর্ঘ ১৩টি বৎসর পর্যন্ত মক্কাবাসীদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন। যার ফলে মক্কার কয়েক জন লোক ইসলাম গ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন হযরত খাব্বাব রা.। তাকে ইসলাম গ্রহণ করার অপরাধে আগুনের জ্বলন্ত অংগাারের উপর চিৎকরে শোয়ায়ে রাখা হত। যার ফলে তার চামড়া পুড়ে চর্বি গলে আগুন নিভে যেত। অনুরূপ হযরত বেলাল রা. এর সাথেও করা হত। এমন কি বৃদ্ধা মহিলা হযরত সুমাইয়া রা.কে ইসলাম গ্রহণের অপরাধে আবু জেহেল বর্ষা হাতে নিয়ে তার লজ্জাস্থানে আঘাত করে শহীদ করে ছিল। দীর্ঘ ১৩বছর সন্ত্রাসী হামলা সহ্য করার পর আল্লাহ পাক নির্দেশ দিলেন, হে মুহাম্মদ! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনি আপনার নিরিহ নির্যাতিত অনুসারীদেরকে নিয়ে হিজরত করুন। তখন তিনি মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করেন। কিন্তু তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিজ্ঞা করল যে, তাদেরকে সেখানেও শান্তিতে বসবাস করতে দিবে না। তাই হিজরতের দু’বছর পর মক্কার শীর্ষ সন্ত্রাসী আবু জেহেল প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত, অস্ত্রে-সস্ত্রে সজ্জিত, অশ্বারোহী ১০০০জনের এক সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মদীনায় হামলা করার জন্য রওনা হল। তারা ২২০মাইল অতিক্রম করে চলে আসল। এবার আল্লাহ পাক নির্দেশ দিলেন যে, আর সন্ত্রাস সহ্য নয়। এবার সন্ত্রাস দমন করার জন্য বের হয়ে যান। কারণ ১৩টি বছর পর্যন্ত সন্ত্রাস সহ্য করেছেন। এখনো যদি সন্ত্রাস সহ্য করতে করতে দুনিয়া থেকে চলে যান তাহলে পৃথিবীটাকে সন্ত্রাস মুক্ত করে গড়ে তুলবে কে? এই নির্দেশ পেয়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের নিরীহ প্রায় নিরস্ত্র ও পদাতিক ৩১৩জন সাহাবীদেরকে নিয়ে আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করার জন্য বের হলেন।
     অতঃপর মদীনা থেকে ৮০মাইল দুরে বদরের প্রান্তে মুখোমুখী হয়ে যান। আল্লাহ পাকের সাহায্যে মুসলমানের হাতে ৭০জন সন্ত্রাসী নিহত হল এবং ৭০জন বন্দী হল। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই বন্দীদেরকে পাহাড়া দেয়ার জন্য যে সমস্ত মুসলমানকে নিযুক্ত করেছিলেন তাদেরকে বলে দিয়েছিলেন যে, এদের ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এরা তোমাদের মেহমান। সুবহানাল্লাহ! নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ বন্দীদেরকে মেহমান বলার কারণে তারা তাদেরকে গোস্ত রুটি খেতে দিতেন। আর নিজেরা প্রত্যেকেই একটা/দুইটি খেজুর খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করতেন। দেখুন মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কত বড় দয়ালু মহামানব! খোদার কসম, গোটা সৃষ্টি জগতে তাঁর চেয়ে বড় উদার মহামানব নেই। 
         বর্তমানে ইহুদী-খ্রীষ্টানদের ইতিহাস দেখুন যে, তারা কেমন নির্দয়, নিষ্ঠুর। একটি নিরপেক্ষ সূত্রে জানা যায় যে, ২০০৩সালের মার্চে ইরাকে আগ্রাসী হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে গত ২০০৪অক্টোবর পর্যন্ত ১৯ মাস সময়ে মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনীর আগ্রাসী হামলায় লক্ষাধিক ইরাকী নিহত হয়েছে। ইরাকের কারাগারগুলোতে সন্দেহ ও অজ্ঞতাবশত ধরে এনে আটক করা হয় নিরীহ বেসামরিক নারী-পুরুষদেরকে। অকারণে তাদের উপর চালানো হয় নির্মম নির্যাতন। পাশাপশি উলঙ্গ করে রাখা হয় বন্দীদের। কুকুর লেলিয়ে দেয়া হয়। লজ্জস্থানে ইলেকট্রিক শক দিয়ে ছাদের সাথে ঝুলিয়ে রেখে কিংবা ভারি বাক্স মাথায় নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে নির্যাতন চালায় তারা। 

          গত শতকের পঞ্চাশের দশকে ব্রিটিশ সেনারা কেনিয়ার প্রায় দশ হাজার নাগরিককে জবাই করে হত্যা করে। ষাটের দশকে আমেরিকানরা ভিয়েতনামের জনগণকে বলত, মানব উকুন। সেখানে তারা লোমহর্ষক অত্যাচার ও হত্যাকা- চালায়। চালায় নারী ও শিশুদের উপর যৌননিপীড়ন। বোমার আঘাতে পঙ্গু করে দেয় হাজার হাজার জনগণকে। সেখানে তারা মহিলাদের গণধর্ষণ শেষে স্তন কর্তন করে উল্লাস করে। এক নির্যাতিতা ইরাকী মুসলিম বোনের ইজ্জতের উপর যে লোমর্ষক বর্বর নির্যাতন চালায় তা তিনি হৃদয়ের আবেগ দিয়ে আবুগারীব বন্দিশালা থেকে উদাসীন তমসাচ্ছন্ন মুসলিম উম্মাহর নামে ১০মে ২০০৪ তারিখে একটি পত্র লেখেন, যার কিছু অংশ এখানে উল্লেখ করা হল।
         প্রিয় ভাই-বোনেরা! আমি নূর। নিরপরাধ বন্দী এক তরুণী। তোমাদের বোন খুনের কালিতে লিখছে তার মিনতি। আবুগারীব বন্দীশালায় নির্যাতিতা মা-বোনদের দুঃখের কথা। আমাদের উপর যে নির্মম অমানবিক জুলুম অত্যাচার করা হচ্ছে তা প্রকাশ করার ভাষা আমার নেই। আমাদের পবিত্র আচল, মর্যাদার চাদর আজ ছিন্নভিন্ন। আমরা আমেরিকার ক্রুসেডের শূলে ঝুলন্ত। তারা আমাদের এত অসহনীয় ও অকল্পনীয় শারীরিক নির্যাতন করছে যার ফলে আমরা ক্ষত-বিক্ষত। প্রতি রাতে আমেরিকার শয়তানগুলো আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইজ্জত লুন্ঠন করছে। আমাদের ইজ্জত ধুলোয় মিশে গেছে। মৃত্যুর জন্য আমরা বিলাপ করছি। হায়! মৃত্যু আসতে বিলম্ব করছে! হে শান্তিময় মুক্ত আবহাওয়ায় বসবাসকারীগণ! তোমরা যখন আয়েশী জীবনে বিলাসী খানায় মশগুল। রুচিকর সুস্বাদু বাহারী খাবার নিয়ে যখন তোমরা আনন্দে লিপ্ত তখন তোমাদের মা-বোন এক মুঠ খাবারের জন্য কাতর। তারা ক্ষুধার্ত, পিপাষার্ত। তোমরা যখন শীতল পানীয় পানে ব্যস্ত, তখন তোমাদের মা-বোন এক ফোঁটা পানি থেকেও বঞ্চিত। তোমরা যখন নরম তুল তুলে ঝকঝকে আরামদায়ক শয্যায় শায়িত, তখন তোমার বোন কণ্টকযুক্ত বিছানার অপেক্ষায় অপেক্ষমান। বন্দীশালায় আমরা পরস্পরে জিজ্ঞাসা করি, আমাদের স্বজাতীয় বীর ভাইয়েরা কোথায়? প্রতিদিন জিন্দানখানার অন্ধকারময় পরিবেশে জানালার ফাঁক দিয়ে অপেক্ষা করি। এইতো আমাদের ভাইয়েরা আসছে। তারা আমাদের শিকল পড়া হাত-পা থেকে বাধন খুলে দিচ্ছে। এই তো তারা আমাদেরকে শোনাচ্ছে, মা ও বোনেরা! যাও। তোমরা মুক্ত স্বাধীন। আমরা প্রতিদিন মরুভূমির তপ্ত পথে নির্জন বিয়াবানের পথ চেয়ে অপেক্ষা করি। এইতো আসছে যুগরে মুহাম্মদ বিন কাসেম। না! আমাদের অপেক্ষার প্রহর আর শেষ হয় না। দুঃখের দীর্ঘ সময় আর কাটে না। নাহ! কেউ আর আসছে না। কেউ নেই আমাদের আওয়াজ শোনার। মুসলিম উম্মাহ! তোমরা আমাদের চিৎকার শোন! আমাদের আর্তনাদে সাড়া দাও।
       মুসলিম ভাইয়েরা! আমরাও ঈমানী চেতনায় উদ্দীপ্ত। আমরাও মুসলিম। তোমরা আমার মিনতি শোন। আমরা আমাদের গর্ভে কাফিরদের সন্তান ধারণ করতে পারব না। কি হবে বেঁচে থেকে?
 

             পত্রটি ১০ই মে ২০০৪ সনে আল বসরা ওয়েব সাইটে আরবী ভাষায় প্রকাশিত হয়। ইহুদী-খ্রীষ্টানরা এরকম হাজারো নির্যাতন মুসলমানদের উপর চালিয়ে যাচ্ছে। চালাচ্ছে হিংস্রতা ও সন্ত্রাসী কর্মকা-। এর কারণ হল তাদের ধর্ম বিশ্বাসই তাদেরকে এসব করতে উদ্বুদ্ধ করে। এর একটি প্রমাণ হল, কুরআনের আলোকে বেহেস্তে যাওয়ার পথ নামক বইটিতে খ্রীষ্টানরা লিখেছে, “সব মানুষের আদি পিতা আদম আ. প্রথম মানুষ প্রথম পাপীষ্ঠ”। কাজেই এই পাপীষ্ঠ আদমের ঘরে যত নবী জন্মগ্রহণ করেছেন সব নবীই পাপীষ্ঠের ঘরের পাপীষ্ঠ। তাই আল্লাহ তাআালা একজন নবীকে পাপমুক্ত করে নিজেই পিতা হয়ে জন্ম দিলেন। আর সেই নবীর নাম হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম। যেহেতু তিনি ছাড়া সবাই পাপীষ্ঠ তাই তিনি তার পিতা আল্লাহর কাছে আবদার করলেন, তুমি আমার শত্রুদেরকে সুযোগ দাও তারা যেন আমাকে শূলিতে চড়িয়ে হত্যা করে। তাতে আমার যে কষ্ট হবে, সে কষ্ট কিয়ামত পর্যন্ত আগত-অনাগত ঐ সব মানুষের জন্য অগ্রীম কাফ্ফারা হবে। যারা আমাকে তোমার পুত্র বলে স্বীকার করবে ও বিশ্বাস করবে। তখন পিতা তাঁর পুত্রের এই দরখাস্ত মঞ্জুর করলেন” সুতরাং তাদের ধর্ম বিশ্বাস মতে তারা কিয়ামত পর্যন্ত যত অপরাধ করবে, জীবনে যত সন্ত্রাস, চুরি, ডাকাতী, ব্যভিচার, যা কিছুই করবে সব আগেই মাফ হয়ে গেছে। সুতরাং খ্রীষ্টানদেরকে তাদের ধর্ম বিশ্বাসই সন্ত্রাসী বানায়, সন্ত্রাস শিক্ষা দেয়।
           কিন্তু ইসলাম ধর্ম মুসলমানদেরকে সন্ত্রাসী হতে দেয় না। ইসলামের বিধানে কারো বিরুদ্ধে ন্যায়সংগতভাবে যুদ্ধ ঘোষণা না দিয়ে গোপনে হামলা করে নিরীহ মানষ হত্যা করা হারাম। সুতরাং শেখ আব্দুর রহমান এবং বাংলা ভাই যে সমস্ত কর্মকান্ড করেছিল তা ছিল ইহুদী-খ্রীষ্টানদের দালাল হিসেবে। যাতে বুশ এবং প্রফেসর হেনস বিশ্বের মানুষের কাছে প্রমাণ করতে পারে যে, এই দেখ ! মুসলমানেরাই সন্ত্রাসী। আরো কিছু নামধারী মুসলমান এমনও আছে যারা বলে যে কওমী মাদ্রসায় শুধু বোমা বানানো শিখানো হয়। এর প্রমাণ স্বরূপ শেখ আব্দুর রহমান এবং বাংলা ভাইকে পেশ করে থাকে। অথচ তারা কোন কওমী মাদ্রাসায় পড়ে নাই। বরং বোমাবাজ ডঃ আসাদুল্লাহ গালিব ছিল ভার্সিটির প্রফেসর। অতএব, ভার্সিটি বন্ধ না করে মাদ্রসা বন্ধ করতে বলা এটা নিঃসন্দেহে তথ্য সন্ত্রাস এবং ইহুদী- খ্রীষ্টানদের দালালী।
সবাই জানে যে, আফগানিস্থানে ইসলামী হুকুমত কায়েম হওয়ার পর ঐ দেশটিই ছিল সঠিক অর্থে পৃথিবীর একমাত্র স্বাধীন মুসলিম দেশ। তারা কারো বশ্যতা স্বীকার করে নি। তাই আফগানিস্তানে যদি ইসলামী হুকুমতের শিকড় মজবুত হত তাহলে অদূর ভবিষ্যতে মুসলিম বিশ্ব বিজয়ী সাহাবাগণের ইতিহাস রচনা করত। কারণ এটাই হত সমস্ত মুসলিম বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র। এ কারণে চক্রান্তের বিজ্ঞ নায়করা কালক্ষেপণ না করে নাইন ইলেভেনের টুইন টাওয়ার নাটকটি সাজিয়েছে। এর কয়েক মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিদ্ধ  যুদ্ধবাজ মিস্টার ডিকচেনি বলেছেন বিন লাদেনকে গ্রেফ্তার করে তাকে বিচারের কাঠ গড়ায় হাজির করতে হবে। তবে এর যথেষ্ট প্রমাণ বা অজুহাত আমাদের হাতে নাই। আর এদিকে টুইন টাওয়ারটি তো এমনিতেই কিছুদিন পর ধ্বংস করা হত। কারণ এর মেয়াদ প্রায় শেষ হয়ে এসেছিল। তাই এমন একটি নাটক সাজানো হয় যাতে টুইন টাওয়ারটি মুসলমানদের টাকায় পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা করা হয় এবং বিন লাদেনকে গ্রেপ্তার করার সুযোগ মিলে। আর পশ্চিমা বিশ্বে মুসলমানদের পরিচয় এভাবে দেয়া হয় যে, মুসলমানরা মূর্খ, অসভ্য, বর্বর, সন্ত্রাসী, চোর, ডাকাত, লম্পট, ব্যভিচারী, ইত্যকার যত অসৎগুণ আছে তা মুসলমানদের সাথে যুক্ত করা হয় । তাদের এ সকল দাবি যে সঠিক এ কথা জনগণকে বুঝানোর জন্য তারা নিজেদের লোকদের দিয়ে টুইন টাওয়ারের নাটকটি বাস্তবায়ন করে। আর দোষ চাপায় মুসলমানদের উপর। তাদেরকে প্রশ্ন করা হল যে, নিরীহ মুসলমানদের উপর জুলুম চালাও কেন? তখন তারা বলে যে, সন্ত্রাস দমন করি। তখন তাদেরকে পাল্টা প্রশ্ন করা হল যে, মুসলমান ছাড়া আর কোন সন্ত্রাসীজাতি কি পৃথিবীতে নেই? তখন এর জবাব তারা এভাবে দিল যে, মুসলমানদের নবী নিজেই ছিলেন সন্ত্রাসী। অতএব, সন্ত্রাস দমন করতে হলে আগে মুসলমাদেরকেই নিধন করতে হবে। (নাউযু বিল্লাহ)
 
          তারা নিজেরা সন্ত্রাসী হয়ে অন্যদেরকে সন্ত্রাসী বলে কেন? এর রহস্য একটা ঘটনার মাধ্যমে আপনারা সহজে বুঝতে পারবেন। ঘটনাটি হলো ২৬/০৩/২০১১ তারিখে ঢাকা, দোহার এলাকার নারিশা পশ্চিমচর গ্রামে জয়নুদ্দিন হাওলাদারের বাড়িতে ডাকাতরা ডাকাতি করে পালিয়ে যাবার সময় যখন দেখল যে, এলাকার চতুর্পাশ থেকে লোকজন তাদেরকে ধরার জন্য ছুটছে। তখন তারা রক্ষা পাওয়ার জন্য একটি ফন্দি এটে বড় গলায় বলতে লাগল যে, ডাকাত পালিয়ে গেল! ডাকাত পালিয়ে গেল! এ সময় হৈ হট্টগোল করে তারা উধাও হয়ে গেল।
 
            ঘটনাটি বুঝে থাকলে বলুন ডাকাতরা কেন তাদের মুখে বলে যে, ডাকাত পালিয়ে গেল ? সমাজের মানুষ যেন বুঝতে না পারে তারা নিজেরাই ডাকাত। ঠিক তেমনি ভাবে সমাজের শীর্ষ সন্ত্রাসীরাই সন্ত্রাস দমন করি বলে দাবি করে। সারা বিশ্বের সরল জনতা যেন জানতে না পারে যে, সন্ত্রাস দমনের নামে তারাই বিশ্ব সন্ত্রাসী। তারা যে জিহাদকে সন্ত্রাস বলে আক্ষায়িত করে এর কারণ হল, তারা ভালো করেই জানে যে, মুসলমানরা যদি সংঘবদ্ধ ভাবে জিহাদ করতে থাকে তাহলে অদূর ভবিষ্যতে মুসলমানেরা আবার ফিরে পাবে তাদের হৃত ঐতিহ্য, গৌরব ও মর্যাদা। অবসান হবে এই পৃথিবী থেকে সব ধরণের পাপাচার, অত্যাচার, অন্যায়-অবিচার। অবসান হবে এই ধরণের সন্ত্রাস শোষণ, নির্যাতন। দুনিয়ায় আবার ফিরে আসবে সাম্য, শান্তি, সমৃদ্ধি, ভ্রাতৃত্ব। আর তখন হবে সম্রাজ্যবাদ সহ পৃথিবীর সকল কায়েমী স্বার্থবাদের মৃত্যু। তাই কি ভাবে দুনিয়া থেকে খোদাই বিধান জিহাদকে চিরতরে উঠিয়ে দেয়া যায় এ জন্যই তারা গভীর ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
 
           সারকথা, শেষনবী যেরূপ সন্ত্রাস উৎখাতের জন্য সংগ্রাম করেছেন আমাদেরও তার অনুসরণ ও অনুকরণ করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সহায় হন। আমীন।
 

No comments:

Post a Comment

 

NameSilo Coupon Code "discount1$foryou"

like

like
like