Pages

জ্যোতিষ বিদ্যা সম্পর্কে ইসলামের হুকুম

Tuesday, September 17, 2013



                   মানুষের ভবিষ্যত জানার জন্য জ্যোতিষ বিদ্যা শুধু হারামই নয় বরং শিরক ও কুফুরের শামিল। জ্যোতিষীর নিকট যাওয়া এবং তার ভবিষ্যত বাণী শোনা, জ্যোতিষ বিদ্যার জন্য বই ক্রয় করা বা জ্যোতিষীর কাছে অবস্থা বলে হাত দেখিয়ে অথবা অন্য কোন মাধ্যমে ভবিষ্যত সম্পর্কে জানতে চাওয়া সবই ঈমান বিধ্বংসী মারাত্মক কুফুরী প্রথা। এমনিভাবে গণক জ্যোতিষীর বক্তব্যের প্রতি বিশ্বাসী না হয়ে শুধু তার নিকেটে যাওয়া এবং কিছু জানতে চাওয়া সম্পর্কে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে গণকের কাছে যায় এবং কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে তার চল্লিশ দিন ও রাতের নামায কবুল হয় না। (মুসলমি শরীফ) 
                অন্য হাদীছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি গণকের নিকট গিয়ে কোন বিষয় জানতে চায় চল্লিশ (দিন) রাত পর্যন্ত সে তওবার সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকে। আর যদি সে গণকের কথা বিশ্বাস করে তবে সে কুফুরী করল। কোন কোন বর্ণনায় আছে চল্লিশ-দিন রাত পর্যন্ত তার নামায ও অন্যান্য ইবাদত কবুল হয় না। (তবরানী যাওয়াজির ২:১৭৭)

                    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো ইরশাদ করেন,
                          العيافة والطيرة والطرق من الجبت 
অর্থাৎঃ জ্যোতিষীদের কর্ম কা- শুভাশুভের লক্ষণ নির্ণয় বা রাশিফল সবই কুফুরী প্রথার অন্তর্ভূক্ত (আবু দাউদ শরীফ ২:৫৪৫, নাসায়ী, ইবনে হিব্বান ২:১৭৭) 


           হস্তরেখাবিদের নিকট ভালমন্দ জানার উদ্দেশ্যে যাওয়া সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা জাল্লা শানুহু কুরআন শরীফে বলেন, যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তার পিছনে পড়ো না। নিশ্চই কান চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে। (সূরা বনী ইসরাইল :৩৬) 

             অশুভ ফাল (গণনার) ভিত্তিতে সফর থেকে বিরতি না থাকার বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, لن ينال الدرجات العلا من تكهن او استقسم او رجع من سفر تطيرا  অর্থাৎ- ঐ ব্যক্তি কখনো উচ্চ মর্যাদা লাভ করতে সক্ষম হবে না যে গণক সাজে অথবা তীর নিক্ষেপের  মাধ্যমে গোস্ত বণ্টন করে অথবা পাখি বাম দিক উড়ে গেলে (অশুভ লক্ষণ মনে করে) সফর থেকে বিরত থাকে। আর ডান দিকে উড়ে গেলে (শুভ লক্ষণ মনে করে) সফরে যায়। (বিশুদ্ধ সূত্রে তাবরানী বর্ণনা করেন, বায়হাকী, যাওয়াজির ১ম খন্ড ২৪৮ পৃঃ )

             সতর্কবাণীঃ  উক্ত গুনাহ তখনই কবীরা গুনাহ হিসেবে গণ্য হবে যখন জাহেলী যুগের ন্যায় এ ফলাফলের প্রতি পূর্ণ আস্থাশীল হবে যে, পাখি অমুক দিকে উড়ে গেলে সফর ফলপ্রসূ হবে অন্যথায় নয়। উক্ত কাজের ফলাফলের প্রতি নিশ্চত বিশ্বাস স্থাপন করা শিরকের পর্যায়ের কবিরা গুনাহ। (যাওয়াজির ১:২৪৮) 

      যদি কেউ গণক-ঠাকুর অথবা জ্যোতিষের নিকটে যায় তার থেকে আল্লাহ এবং অন্যরাও হয়তো অদৃশ্য ও ভবিষ্যত সম্পর্ক জানে বলে বিশ্বাস করা প্রকাশ পায়। এটাও এক ধরণের র্শিক। কারণ আল্লাহ তাআলা পরিষ্কারভাবে বলেছেন, গাইবের কুঞ্জি একমাত্র আল্লাহর কাছে। তিনি ছাড়া তা কেউ জানে না। (সূরা আনআম :৫৯) 

        তাই কেউ জ্যোতিষীর রাশিচক্র বা প্রদত্ত ভবিষ্যতবাণী বিশ্বাস করলে, সে সরাসরি কুফুরী করে ঈমান হারাবে। এ বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কোন গণকের কাছে গেল এবং সে যা বলল তা বিশ্বাস করল, তাহলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে যা অবতীর্ণ হয়েছে সে তা অবিশ্বাস করল। (আবু দাউদ ২:৫৪৫ ও আহমদ) 

             উক্ত হাদীস দ্বারা বুঝায় গণক ও জ্যোতিষীর একই হুকুম অর্থাৎ উভয়ের কাছে যাওয়া এবং তাদের  কথা বিশ্বাস করা কুফুরী কাজ। যার দ্বারা ঈমান নষ্ট হয়ে যায়। রাশি বলতে ইসলামের কিছুই নেই। ফালের কোন স্থান ইসলামে নেই। সুতরাং সব ধরণের গণক ও জ্যোতিষী হতে দূরে থাকা উচিত। কোন অবস্থাতেই তাদের কাছে যাওয়া ঠিক না। অনুরূপ তাদের রিং, আংটি, হার ইত্যাদি ব্যবহার করা, তা ধরা, তাদের বই-পুস্তক, খবরের কাগেজে রাশিচক্রের কলাম পড়া বা বিশ্বাস করা না জায়েয ও গোনাহ।  এ ছাড়া গ্রহের তা’ছীর বিশ্বাস করা, হিন্দুদের দেব-দেবতা বা মুর্তির কোন ক্ষমতা আছে বিশ্বাস করা ঈমান ধ্বংসী। এ থেকে সবার দূরে থাকা জরুরী। 

 

NameSilo Coupon Code "discount1$foryou"

like

like
like