মেয়েদের কপালে টিপ দেয়া জায়েয নেই
কপালে টিপ দেয়া হিন্দুয়ানী প্রথা এবং তাদের ধর্মীয় প্রতীক। আর কোন মুসলমানের জন্য বিধর্মীদের প্রথা পালন করা জায়েয নয়। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, من تشبه بقوم فهو منهم যে যে জাতির সাদৃস্য অবলম্বন করে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়। কথিত আছে হযরত ইব্রাহীম (আঃ)কে যখন জালিম বাদশাহ নমরূদ আগুনের কুণ্ডুলিতে নিক্ষেপ করেছিল তখন সে ¯'ানে তাঁকে রক্ষা করার জন্য যেন ফেরেস্তা না আসতে পারে সে জন্য শয়তান বুদ্ধি দিয়েছিল, সে ¯'ানে মেয়েদেরকে নিয়ে যিনা করতে। অবশ্য নমরূদের সে চেষ্টা ফলদায়ক হয় নি। কিš' পরবর্তীকালে সে নষ্ট হয়ে যাওয়া মেয়েদেরকে সমাজ থেকে আলাদা করে রাখার জন্য তাদের মাথায় সিঁদুর দিয়ে চিহ্নিহ্নত করে দেয়া হয়েছিল। আজকাল এটা হিন্দু ধর্মের বিশেষ একটা কালচার। সুতরাং, এটা মুসলমান মেয়েদের কালচার হতে পারে না।
নখ পালিশ লাগানো ঠিক নয়
সু¯' মানুষের আঙ্গুলের প্রতিটি নখ প্রতি মাসে এক ইঞ্চির এক অষ্টমাংশ বৃদ্ধি পায় এবং একজন সাধারণ মানুষের জীবনে পঞ্চাশ বছরে আঙ্গুল ছয় ফুট নখ সৃষ্টি হয়। উপসাগরীয় অঞ্চলে একটি সংবাদ পত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী আজ থেকে দুই হাজার বছর আগে ডাক্তারগণ আঙ্গুলের নখ এবং সা¯'্য সম্পর্কে বুঝতে পেরেছিলেন। বর্তমানে ডাক্তারগণ সর্ব প্রথম রোগীর নখের উপর নযর ফেলেন। নখের সাদা রং রক্তে লোহিত কনিকার স্বল্পতার ইঙ্গিতবাহী। রিপোর্ট অনুযায়ী প্রাচীনকালেও মিশরের মহিলারা নখের উপর রং এবং তৈল লাগাত। নেইল পালিশের ব্যাবহার ঐ ফেরাউনী যুগের স্মৃতি। তৎকালীন আমলে তৈল দিয়ে রং উঠিয়ে ফেলা যেত। কিš' বর্তমান যুগের মহিলারা নেইল পালিশ ব্যাবহার করে যা নখের জন্য খুবই ক্ষতিকর। কমদামী নেইল পালিশের রিমোভার স্বাভাবিক আর্দ্রতা শোষণ করে। যার ফলে নখকে বেশী লম্বা করা উচিত নয়। এটা দৈহিক দুর্বলতা ও অসু¯'তার কারণ হতে পারে। এগুলো স্বা¯'্য বিজ্ঞানের সংক্ষিপ্ত কথা। শরিয়তের কথা হল, নখের উপর যে নেইল পালিশ ব্যাবহার করা হয় মুলতঃ এটা এক প্রকারের আবরণী। অযূ বা গোসলের সময় এ আবরণী ভেদ করে নখের গায়ে পানি পৌছে না। সুতরাং কোন বালেগা মেয়ে বা পুরুষ যদি এটা ব্যবহার করে তাহলে তার অয়ূ ও গোসল কোনটাই দুরস্ত হয় না।
ভ্রু সরুকরণ
মাত্রাতিরিক্ত কৃত্রিম রূপ ও সৌন্দর্য অর্জনের আর একটি আধুনিক উপায় হচ্ছে চুল বা পশম উপড়ানো। আর তা সাধারণতঃ ভ্রুর চুল উপড়িয়ে ভ্রুকে যথাসম্ভব সরু করা হয়। কিš' এ কাজটি ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম। আমাদের দেশের শহরগুলোতে অসংখ্য বিউটি পার্লার গজিয়ে উঠেছে। শরীয়ত বিরোধী বিভিন্ন প্রকার রূপচর্চার মাধ্যমে নাকি মহিলারা বিনোদন লাভ করে। বুখারী ও মুসলিম শরীফের হাদীসে আছে হযরত ইবনে মাসউদ রা. হতে বর্ণিত রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যারা আল্লাহর সৃষ্টিতে পরিবর্তন করে, যে সব নারী ও পুরুষ নিজের দেহে উলকি করায় এবং যারা নিজেদের ভ্রুর পশম উপড়ায় এবং যারা সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে দাঁত সরু করে তাদের উপর রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর লা’নত।
আলগা চুল লাগানো ঠিক নয়
নারীদের মাথার চুলে অন্যের চুল লাগিয়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করাও হারাম। তা আসল চুল হোক বা নকল চুল হোক। ইমাম বুখারী রহ. হযরত আয়েশা রা. আসমা ইবনে মাসউদ রা. ইবনে উমর ও আবু হুরাইরা রা. সূত্রে হাদীস উদ্ধৃত করেছেন,
ان النبي الله صلي الله عليه وسلم لعن الواصلة والمستوصلة
যে চুল জোড়া লাগায় এবং যে অন্যেদের দ্বারা এ কাজ করায় উভয় নারীর উপর রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা’নত করেছেন। নারীর ব্যাপারে যখন এ কথা তখন যদি পুরুষ এ কাজ করে তাহলে পুরুষের বেলায়ও লা’নত হবে। এমনকি যে নারীর মাথার চুল কোন রোগের কারণে পড়ে যায় তার পক্ষে অন্য কারো চুল নিজের মাথায় জড়ানো জায়েয নেই। চুলে চুলে জোড়া লাগানো ইহুদীরা ছাড়া আর কেউ এ ফ্যাশন করে বলে আমি মনে করি না। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চুলের সাথে অপরের চুল জড়ানোকে মিথ্যা এবং ধোঁকা আখ্যায়িত করেছেন। আর এক বর্ণনা মতে হযরত মুআবিয়া রা. মদীনা বাসীদের বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ধরণের কাজ করতে নিষেধ করেছেন তা আমি নিজে শুনতে পেয়েছি। তাকে এ ও বলতে শুনেছি যে, বনী ইসরাঈলী মেয়েরা যখন এ ফ্যাশন শুরু করল, তখনই তাদের উপর আল্লাহর আজাব আসল। আর তখনই ধ্বংস শুরু হল।
নারীদের মাথা কামানো ও মাথার চুল ছোট করা
হযরত আলী রা. থেকে বর্ণিত। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদের চুল কাটতে নিষেধ করেছেন। ইসলামী জীবন ব্যব¯'ায় নারীদের চুল কামানো ও পশম কাটা কঠোর ভাবে নিষেধ করা হয়েছে। (নাসাঈ শরীফ)
কেননা নারীদের সৌন্দর্য লম্বা কেশের সাথে অধিক সম্পর্কিত। যখন নারীদের এই চুল কেটে বা ছেটে ফেলা হয় বা বিশেষ হেয়ার বিন্যাস করা হয় তখন নারীর দেহে নানান প্রকার রোগ দেখা দেয়। আমেরিকান এক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অনুযায়ী বলা হয় যে, নারীদের চুল বৃদ্ধি সু¯'তা ও সবলতার জন্য অতীব জরুরী। কেননা তাদের চুল যত বৃদ্ধি পাবে ততই তাদের দৈর্য্য সহনশীলতা কমনীয়তা বৃদ্ধি পাবে। ফলে তারা অসংখ্য রোগ-ব্যাধি থেকে নিরাপদ থাকবে । কেননা মহিলাদের জন্য সৌন্দর্য হল মাথার চুলকে লম্বা করা। পুরুষের জন্য সৌন্দর্য হল দাড়িকে এক মুষ্ঠি লম্বা করা। পুরুষ-মহিলাদের মধ্যে আসমান-যমীন পার্থক্য। পুরুষের মাথার চুলকে ছোট করবে অথবা সুন্নত মোতাবেক রাখবে। পক্ষান্তরে নারী জাতির চুল কুদরতী ভাবে লম্বা ও ঘন হয়। তারা যদি সে চুল কাটে বা ছাটে তাহলে তাদের দেহে এমন ব্যধি দেখা দেয়, যার বিবরণ ব্যাধির তালিকায় বিদ্যমান। এরূপ নারীরা দৈহিক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। সূতরাং একজন সু¯' নারীর জন্য বিজাতির অনুকরণ বর্জন করা এবং সুন্নত মোতাবেক জীবন-যাপন করা অপরিহার্য।
No comments:
Post a Comment